মহামারী করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশ ব্রাজিলে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে।
টিকাদান কর্মসূচীর ধীর গতি, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়াতে থাকায় ও শীতের শুরু এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি ফের আরোপ করতে সরকারের অনীহা, এসব কারণে দেশটিতে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্রাজিলের মাত্র ১১ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক লোককে করোনাভাইরাস টিকার দুটি ডোজই দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ অবস্থায় পরিস্থিতিকে ‘সংকটজনক’ বলে অভিহিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ফিয়োক্রুজ।
শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫০ জন আর এদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত সপ্তাহে দেশটিতে দৈনিক গড়ে ২০০০ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পরই ব্রাজিলের অবস্থান।
কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুতে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ইতোমধ্যেই শীর্ষে থাকা ব্রাজিলে সংখ্যাটি আরও অনেক উপরে উঠবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
দেশটির স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনভিজার সাবেক প্রধান গনজালো ভেচিনা বলেন, “আমার মনে হয় টিকার প্রভাব দেখার আগেই আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা সাত বা আট লাখে পৌঁছে যাবে।”
শিগগিরই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে এমন আভাস দিয়ে তিনি বলেন, “যে নতুন ধরনগুলো আসছে সেগুলোর অভিজ্ঞতা হচ্ছে আর ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট আমাদের একটি চক্রের দিকে ঠেলে দিতে পারে।”
ব্রাজিলের চরম ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর যেভাবে মহামারীর মোকাবেলা করছেন তার সমালোচনা করেছেন ভেচিনা। মহামারী মোকাবেলায় ব্রাজিলের সমন্বিত কোনো রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেই, টিকা নিয়ে বোলসোনারোর সংশয়, লকডাউন ও মাস্ক পরা প্রয়োজনীয় হলেও এসব বিধিনিষেধ শিথিল করার পক্ষে প্রেসিডেন্টের অবস্থানে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
শনিবার সারা দেশজুড়ে হাজার হাজার ব্রাজিলীয় বোলসোনারোর মহামারী ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। ব্যাপক মৃত্যুর জন্য তারা দেশটির প্রশাসনকে দায়ী করে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছে।