গত ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবালয়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনার শিকার হয়েছেন এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাইরে প্রথম ও বৃহত্তম সাংবাদিক সংগঠন লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাব।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফোন করে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে বুধবার লণ্ডন সময় দুপুর ৪টায় পূর্ব লণ্ডনের আলতাব আলী পার্কে মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ব্রিটিশ মূলধারার সাংবাদিক সংগঠনে চিঠি লিখে এই ঘটনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।
লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়ের, কোষাধক্ষ আ স ম মাসুম মংগলবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেখানে তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের যে সমস্ত ছবি এবং ভিডিও দেখা গেছে তা একটি সরকারের সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণ এবং পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সাংবাদিকরা রোজিনা ইসলামের উপর যে তথ্য চুরির অভিযোগ আনা হচ্ছে, এটা একটা অনুসন্ধানী সাংবাদিকের খবর সংগ্রহের ক্ষেত্রে এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দূর্নীতি এবংঅনিয়ম নিয়ে একাধিক আলোচিত প্রতিবেদন করেছেন এবং তার পত্রিকায় ফলাও করে তা ছাপা হয়েছে। সুতরাং তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য বলে আমরা মনে করি।
যৌথ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এমন ঘটনা স্বাধীন গনমাধ্যমের জন্য হুমকী। রোজিনা ইসলামকে যেভাবে আটকে রেখে হেনস্থা করা হয়েছে, গলা চেপে ধরা হয়েছে তা স্বাধীন গণমাধ্যম ও সঠিক তথ্য প্রবাহের জন্য বড় বাধা । উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে এবং তাকে এমন এক কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে যা নিয়ে তিনি তিন মাস আগে রিপোট করেছেন। এটি দুঃখজনক।
এটা ধরে নেয়া সঙ্গত যে, তিনি তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংস্থার দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের কারণে তাদের আক্রোশের শিকার হয়ে থাকতে পারেন।
লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি। তার বিরুদ্ধে আনীত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি এবং তাকে সকল প্রকার পুলিশি হয়রানি থেকে মুক্ত রাখার দাবি জানাচ্ছি। আর যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ব ভুলে একজন সাংবাদিকের উপর এভাবে চড়াও হয়েছেন শাস্তি দাবী করছি ।এছাড়া আমরা ১৯২৩ সালের অফিশিয়াল সিক্রেসী অ্যাক্টে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানাই।