নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এই বয়া মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নদীর মাঝখানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিল। একশ বছর পূর্বে মেঘনা নদীর এই বয়ার অবস্থান থেকে দক্ষিনে একশ কিলোমিটারের বেশি ও পশ্চিমে প্রায় সত্তর কিলোমিটার দূরে সরে গেছে।
আজ মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ের স্থানে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। কৃষকেরা রাশিরাশি সোনার ধান ফলে, বিভিন্ন সবজি চাষ করে কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় মাটিতে পড়ে আছে কলসির মত দেখতে আগুন জ্বালিয়ে রাখার বিশেষ পাত্র এই বয়া। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে বয়া দুইটি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের বয়ার চরে পড়ে থাকা বয়া দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ছুটে আসেন।
প্রায় একশ বছর পূর্বে এতদঞ্চলে যখন মেঘনার উত্তাল তরঙ্গ বয়ে যেতো তখন দূর-দূরান্ত থেকে রাতের বেলায় নৌকা লঞ্চ স্টিমার কিবা দেশ-বিদেশের বড় বড় জাহাজের দিক নির্দেশনা পেতে যেন সহজ হয়, নিশানা ঠিক রাখতে পারে সেজন্য মেঘনা নদীর মাঝখানে বাতি জ্বালিয়ে রাখার বিশেষ ব্যবস্থার নাম বয়া।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মতিন বলেন-‘আমার জন্মেরও বহু বছর আগের এই বয়া। এটা পিতলের তৈরী। বয়ার মাথায় বড় একটা গলুই ছিল। দৃষ্কৃতিকারীরা তা ভেঙে নিয়ে গেছে। আজ বড় মটকার মত দুইটি পাত্র পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়।
বয়ার পাশেই ধানের চাষ করা অপর আরেক কৃষক আব্দুর রব বলেন- ‘বহু দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ এ বয়া দেখতে আসেন।তারা আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি বয়া দেখিয়ে দিই।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর হোসাইন বুলু বলেন- ‘আমি আসলে বিষয়টি অনেকবার শুনেছি তবে এখনো চোখে দেখিনি। যেহেতু আপনি বিষয়টি নজরে এনেছেন আমি শিগগিরই বয়াটি দেখতে যাব এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে তা অবগত করাবো।’
এই নিয়ে সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম বলেন- ‘বিষয়টি যেহেতু আমি অবগত হয়েছি, আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ এসময় ঘটনাস্থলে বয়া দেখতে যাওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।