ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সমাজ পরিবর্তনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। ম্যানচেস্টার সহকারী হাইকমিশনার এর সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের সৌজন্যে সাক্ষাৎ যুক্তরাজ্যের নর্থ-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফখরুল হোসাইনের সাথে বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের মতবিনিময় নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব ইউকের আত্মপ্রকাশ, সভাপতি ফখরুল হোসাইন সম্পাদক নুরুল আমিন ৪০ কেজি ওজনের হলি রামাদ্বান ফ্যামেলি ফুড প্যাক বিতরণ করল আননিয়ামাহ উইমেন্স এডুকেশন ট্রাস্ট ইউ কে যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নিয়ে কেন এই প্রহসন?

মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’ সুন্দর চমৎকার কথাগুলো বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সুন্দর চমৎকার কথাই নয় বাস্তবায়নেও দূরদর্শী ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। দিন মজুর, শ্রমিক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, ভবঘুরে, কৃষক, দরিদ্র, গৃহহীন, ভ্যান চালকসহ সমাজের নিচু শ্রেণীর বঞ্চিত মানুষগুলোর জন্য দেশবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন সিদ্ধান্ত ও তার বাস্তবায়ন দেশ-বিদেশে ভূয়শী প্রশংসা রাখে। যাদের মাথা গোঁজার মতো কোনো ঠাঁই নেই, ভূমিহীন, গৃহহীন, থাকা-খাওয়ার কোন নিশ্চিত ঠিকানা নেই, সেসব মানুষের মাঝে জমিসহ মাথার উপর ছায়া রাখার মত ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও একটি ঘরের ব্যবস্থা করেছিলেন শেখ হাসিনা। অন্য কারো পক্ষে অস্বাভাবিক দুঃস্বপ্ন মনে হলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী এর দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছেন। এমন সময় ঘরগুলো ভেঙে পড়ার মধ্যে দিয়ে যেন আশায় গুড়েবালি হতে চললো।
যে জমিগুলো এতদিন অনাবাদি, পতিত, ভূমিদস্যুদের দখলে ছিল সেসব খাসজমিগুলো উদ্ধার করে দেশের প্রতিটি জেলার, প্রতিটি ইউনিয়নে ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য পাকা গৃহ তৈরি হচ্ছে দেখে যারপরনাই খুশি হয়েছি। এ কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।
প্রথমত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানাই এমন দুঃসাহসী ভূমিকা রাখার জন্য। সমাজের অবহেলিত, নিগৃহীত মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং তা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অঙ্গীকার হিসেবে একজন মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে। সে জন্য তিনি এমন দুরুহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনকি তা বাস্তবায়নে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দেশব্যাপী চলতি বছরে ৪৯২ উপজেলায় ২লাখ ৯৩ হাজার,৩৬১ পরিবার উপহারীয় ঘর পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। তন্মধ্যে ৬৬ হাজার ১৮৯​ পরিবারের হাতে বিনামূল্যে ঘরের ছবি তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন-‘এটাই সবচেয়ে বড় উৎসব, এর চেয়ে বড় উৎসব বাংলাদেশের মানুষের আর হতে পারে না। একদিনে এত ঘর দিতে পারলাম এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের গৃহ নেই তাদের ঘর করে দিতে পারায় অসাধ্য সাধন করতে পারলাম। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর হতে পারে না।’
এমন একটি কঠিন অসম্ভব স্বপ্নকে বাস্তবায়নে রূপদানকারীনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।
দেশব্যাপী গৃহহীনদের জন্য চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমি লক্ষ্মীপুর জেলার যৎসামান্য একটি চিত্র পরিস্ফুটন করবো আজকের লেখায়।
উপহারীয় প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটো বেড রুম, একটি কিচেন, একটি টয়লেট। ফ্লোর ও আশপাশের বেড়া হবে পাকা মানে ওয়াল। উপরে মোটা টিনের চালা। ঘরের জানালা থাকবে ৪ টি,​ দরজা ৩ টি। দরজা জানলা শক্ত এস এস পাইপের দিতে হবে। পাকা ঘর তৈরি করে পুরো বাড়িটা রং করে দিতে হবে। এজন্য সর্ব মোট বাজেট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ বাজেটের বাহিরে ঘরের নিচে থাকছে ২ শতাংশ জমি।
এই বাজেটে কী হবে? কী হচ্ছে? ঘর ভেঙে পড়ছে? নদীতে ভেসে যাচ্ছে?
পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম বাজেটে এতো সুন্দর দৃষ্টিনন্দন বাড়ি বোধহয় বাংলাদেশেই সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী কি সত্যি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা করে প্রতি ঘরের জন্য বরাদ্দ করেছেন?
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আসা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত বাজেট সিট স্বচক্ষে দেখে ভিরমি খাওয়ার দশা হয়েছিল আমার। ঘর তৈরিতে অনিয়ম হয়েছে, দুই নম্বর ইট এসেছে, সিমেন্ট কম হয়েছে, সাদা বালি দিচ্ছে, কত কি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করতে চেয়েছিলাম, করেছিলাম, ডিসি ও ইউএনওকে জানিয়েছি। যখনই দেখলাম বাজেট মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, তখনই ভিরমি খেলাম!
দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান। নিউজ করার স্বার্থে বিভিন্ন আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই। তন্মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর ও কমলনগর উপজেলায় যে কয়েকটি স্থানে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন তৈরি করা হচ্ছে তার প্রত্যেকটিতে চলছে অনিয়ম। ফোনে, সরাসরি ইউএনওকে জানালে তারা বারবার আশ্বস্ত করেছেন যে- ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প। এটাতে দু’নম্বরী করার কোনো সুযোগ নেই।’​
ঠিকাদারকে অমনি ফোনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন কাজের মান নিয়ে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো ঘাটতি নেই।
কোনভাবেই গর্ত না করেই মাটির উপর থেকে ইট বিছিয়ে কলম করা হয়েছে। এই ইটের কলমের উপর টিনের চাল দেয়া হয়েছে। ওয়াল মাটির উপর থেকেই তৈরি করা হয়েছে। সিমেন্টে ব্যবহারে সর্বোচ্চ কৃপণতা দেখানো হয়েছে। ভিটাতে দেয়া শাদা বালি প্রলেপ বা আস্তরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় এমন বাড়ি তৈরি করা হয়েছে যে, তাতে বিন্দু পরিমান ভরসা রাখা যায় না। বান, তুফান বা কোনো কারণ ছাড়াই ইতোমধ্যে দেশব্যাপী উপহারীয় ঘরগুলো কিভাবে নিজেদের আত্মসমর্পণ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তার অসহায় চিত্রগুলো দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
কলমে হাত দিতেই পড়ে গেছে। এমন ঘটনা জেলা উপজেলা প্রশাসন জেনেও তারা অসহায় নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে হয়েছে। কারণ বাজেট স্বল্পতা। তবুও তারা চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। লক্ষ্মীপুর সদরের ইউএনও মোঃ মাসুমকে যখন যেখানে যে ত্রুটির কথা জানানো হয়েছে তখনই তিনি তা সংশোধনের জন্য খুবই তৎপর ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো তৈরি করতে বাজেট স্বল্পতার কারণে কেউ রাজী হচ্ছিল না। ইউএনওর দূরদর্শিতা ও পরিশ্রমের কারণে দূরদূরান্ত থেকে লেবার এনে উপহারীয় ঘরগুলো তৈরি করেছেন।
বাজেট কি সত্যি সত্যি এত কম? মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা! নাকি এর বিপরীতে কিছু আছে? দেশব্যাপী ভেঙে পড়া উপহারীয় ঘরগুলোর চিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এসেছে। আশা করা যাচ্ছে, তিনি এর যথাবিহিত কারণ খুঁজে বের করে অসহায় মানুষের সাথে এই প্রহসনের দৃশ্যত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।★
লেখক কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক
সম্পাদকঃ আবীর আকাশ জার্নাল। 
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সমাজ পরিবর্তনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নিয়ে কেন এই প্রহসন?

আপডেট সময় ০২:২৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১
মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’ সুন্দর চমৎকার কথাগুলো বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সুন্দর চমৎকার কথাই নয় বাস্তবায়নেও দূরদর্শী ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। দিন মজুর, শ্রমিক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, ভবঘুরে, কৃষক, দরিদ্র, গৃহহীন, ভ্যান চালকসহ সমাজের নিচু শ্রেণীর বঞ্চিত মানুষগুলোর জন্য দেশবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন সিদ্ধান্ত ও তার বাস্তবায়ন দেশ-বিদেশে ভূয়শী প্রশংসা রাখে। যাদের মাথা গোঁজার মতো কোনো ঠাঁই নেই, ভূমিহীন, গৃহহীন, থাকা-খাওয়ার কোন নিশ্চিত ঠিকানা নেই, সেসব মানুষের মাঝে জমিসহ মাথার উপর ছায়া রাখার মত ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও একটি ঘরের ব্যবস্থা করেছিলেন শেখ হাসিনা। অন্য কারো পক্ষে অস্বাভাবিক দুঃস্বপ্ন মনে হলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী এর দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছেন। এমন সময় ঘরগুলো ভেঙে পড়ার মধ্যে দিয়ে যেন আশায় গুড়েবালি হতে চললো।
যে জমিগুলো এতদিন অনাবাদি, পতিত, ভূমিদস্যুদের দখলে ছিল সেসব খাসজমিগুলো উদ্ধার করে দেশের প্রতিটি জেলার, প্রতিটি ইউনিয়নে ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য পাকা গৃহ তৈরি হচ্ছে দেখে যারপরনাই খুশি হয়েছি। এ কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।
প্রথমত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানাই এমন দুঃসাহসী ভূমিকা রাখার জন্য। সমাজের অবহেলিত, নিগৃহীত মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং তা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অঙ্গীকার হিসেবে একজন মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে। সে জন্য তিনি এমন দুরুহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনকি তা বাস্তবায়নে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দেশব্যাপী চলতি বছরে ৪৯২ উপজেলায় ২লাখ ৯৩ হাজার,৩৬১ পরিবার উপহারীয় ঘর পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। তন্মধ্যে ৬৬ হাজার ১৮৯​ পরিবারের হাতে বিনামূল্যে ঘরের ছবি তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন-‘এটাই সবচেয়ে বড় উৎসব, এর চেয়ে বড় উৎসব বাংলাদেশের মানুষের আর হতে পারে না। একদিনে এত ঘর দিতে পারলাম এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের গৃহ নেই তাদের ঘর করে দিতে পারায় অসাধ্য সাধন করতে পারলাম। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর হতে পারে না।’
এমন একটি কঠিন অসম্ভব স্বপ্নকে বাস্তবায়নে রূপদানকারীনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।
দেশব্যাপী গৃহহীনদের জন্য চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমি লক্ষ্মীপুর জেলার যৎসামান্য একটি চিত্র পরিস্ফুটন করবো আজকের লেখায়।
উপহারীয় প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটো বেড রুম, একটি কিচেন, একটি টয়লেট। ফ্লোর ও আশপাশের বেড়া হবে পাকা মানে ওয়াল। উপরে মোটা টিনের চালা। ঘরের জানালা থাকবে ৪ টি,​ দরজা ৩ টি। দরজা জানলা শক্ত এস এস পাইপের দিতে হবে। পাকা ঘর তৈরি করে পুরো বাড়িটা রং করে দিতে হবে। এজন্য সর্ব মোট বাজেট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ বাজেটের বাহিরে ঘরের নিচে থাকছে ২ শতাংশ জমি।
এই বাজেটে কী হবে? কী হচ্ছে? ঘর ভেঙে পড়ছে? নদীতে ভেসে যাচ্ছে?
পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম বাজেটে এতো সুন্দর দৃষ্টিনন্দন বাড়ি বোধহয় বাংলাদেশেই সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী কি সত্যি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা করে প্রতি ঘরের জন্য বরাদ্দ করেছেন?
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আসা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত বাজেট সিট স্বচক্ষে দেখে ভিরমি খাওয়ার দশা হয়েছিল আমার। ঘর তৈরিতে অনিয়ম হয়েছে, দুই নম্বর ইট এসেছে, সিমেন্ট কম হয়েছে, সাদা বালি দিচ্ছে, কত কি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করতে চেয়েছিলাম, করেছিলাম, ডিসি ও ইউএনওকে জানিয়েছি। যখনই দেখলাম বাজেট মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, তখনই ভিরমি খেলাম!
দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান। নিউজ করার স্বার্থে বিভিন্ন আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই। তন্মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর ও কমলনগর উপজেলায় যে কয়েকটি স্থানে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন তৈরি করা হচ্ছে তার প্রত্যেকটিতে চলছে অনিয়ম। ফোনে, সরাসরি ইউএনওকে জানালে তারা বারবার আশ্বস্ত করেছেন যে- ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প। এটাতে দু’নম্বরী করার কোনো সুযোগ নেই।’​
ঠিকাদারকে অমনি ফোনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন কাজের মান নিয়ে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো ঘাটতি নেই।
কোনভাবেই গর্ত না করেই মাটির উপর থেকে ইট বিছিয়ে কলম করা হয়েছে। এই ইটের কলমের উপর টিনের চাল দেয়া হয়েছে। ওয়াল মাটির উপর থেকেই তৈরি করা হয়েছে। সিমেন্টে ব্যবহারে সর্বোচ্চ কৃপণতা দেখানো হয়েছে। ভিটাতে দেয়া শাদা বালি প্রলেপ বা আস্তরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় এমন বাড়ি তৈরি করা হয়েছে যে, তাতে বিন্দু পরিমান ভরসা রাখা যায় না। বান, তুফান বা কোনো কারণ ছাড়াই ইতোমধ্যে দেশব্যাপী উপহারীয় ঘরগুলো কিভাবে নিজেদের আত্মসমর্পণ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তার অসহায় চিত্রগুলো দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
কলমে হাত দিতেই পড়ে গেছে। এমন ঘটনা জেলা উপজেলা প্রশাসন জেনেও তারা অসহায় নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে হয়েছে। কারণ বাজেট স্বল্পতা। তবুও তারা চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। লক্ষ্মীপুর সদরের ইউএনও মোঃ মাসুমকে যখন যেখানে যে ত্রুটির কথা জানানো হয়েছে তখনই তিনি তা সংশোধনের জন্য খুবই তৎপর ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো তৈরি করতে বাজেট স্বল্পতার কারণে কেউ রাজী হচ্ছিল না। ইউএনওর দূরদর্শিতা ও পরিশ্রমের কারণে দূরদূরান্ত থেকে লেবার এনে উপহারীয় ঘরগুলো তৈরি করেছেন।
বাজেট কি সত্যি সত্যি এত কম? মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা! নাকি এর বিপরীতে কিছু আছে? দেশব্যাপী ভেঙে পড়া উপহারীয় ঘরগুলোর চিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এসেছে। আশা করা যাচ্ছে, তিনি এর যথাবিহিত কারণ খুঁজে বের করে অসহায় মানুষের সাথে এই প্রহসনের দৃশ্যত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।★
লেখক কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক
সম্পাদকঃ আবীর আকাশ জার্নাল।