ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। ম্যানচেস্টার সহকারী হাইকমিশনার এর সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের সৌজন্যে সাক্ষাৎ যুক্তরাজ্যের নর্থ-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফখরুল হোসাইনের সাথে বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের মতবিনিময় নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব ইউকের আত্মপ্রকাশ, সভাপতি ফখরুল হোসাইন সম্পাদক নুরুল আমিন ৪০ কেজি ওজনের হলি রামাদ্বান ফ্যামেলি ফুড প্যাক বিতরণ করল আননিয়ামাহ উইমেন্স এডুকেশন ট্রাস্ট ইউ কে যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ en ıyı bahis siteleri’deki En Büyük Yalan

জগন্নাথপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

মোঃ রনি মিয়া জগন্নাথপুর সংবাদদাতাঃ- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উটেছে।

ভূমিহীন-গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ করে দেয়া হলেও জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ এর তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনের অনিয়মের কারণে তা ভেস্তে গেছে।
যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম ঘরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি ঘরের সুবিধাভোগীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।
স্থানীয় লক্ষ্মী রানী বিশ্বাসের নিজের জায়গা আছে। কিন্তু তার ছেলে মদন বিশ্বাসকে সরকারি ঘর পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন । ধীরা বিশ্বাসেরও জায়গা আছে। কিন্তু তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন টাকার বিনিময়ে তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সাজনা বেগম (তার মেয়ে সৌদি প্রবাসী), জুয়েল মিয়া (তার ভাই সৌদি প্রবাসী), পারুল বেগম (রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে এবং সাত লক্ষ টাকায় জায়গা খেনেন), সুমেনা বেগম (তার বিয়ে হয়েছে সিলেট), সামছুল ডাক্তার (ফার্মেসি ব্যবসা আছে) সহ এমন অনেককেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুড়ি-চানাচুর বিক্রেতা রাখাল দাসের বাড়ি-ঘর নেই। কিন্তু তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কেবল যারা টাকা দিয়েছে তাদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন হতদরিদ্র পরিবারের ২০ জন ভুক্তভোগী। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় তহশিলদার প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নানা অনিয়ম করেছেন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. ছরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন অনিয়ম করেছেন। এটা মেনে নেয়া যায়না।
বাগমনা গ্রামের দুলন মিয়া জানান, তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন এলাকায় গিয়ে যাচাই-বাছাই না করে ঘরে বসে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে অনিয়ম করেছেন। তাকে আইনের আওতায় আনা উচিত।
ঘরের জন্য আবেদনকারী রিপন চন্দ্র শীল বলেন, আমি হতদরিদ্র পরিবারের লোক। গুচ্ছ গ্রামে ঘরের জন্য গত ১৮ মার্চ আবেদন করি। আবেদন করার পর যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তখন তহশিলদার আমার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু পরে আনন্দ বিশ্বাসের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে আমার নাম বাদ দিয়ে তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।
ধীরাজ বিশ্বাস বলেন, আমরা হতদরিদ্র লোক। আমরা টাকা না দিতে পারায় আমাদের নাম বাদ দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন। আমরা হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাফিজ উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই করে তালিকা করেছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযোগের বিষয়টি আমি দেখছি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের কাছে কিছু নেই। যারা তালিকা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে লিখুন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, আমরা ভূমিহীনদের নামের তালিকা তহশিলদারকে দিয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছেন তহশিলদার। আমাদের দেয়া তালিকা থেকে ১০ টি নাম বাদ দিয়ে নতুন ১০ টি নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এখন শুনেছি সঠিক ভূমিহীনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেননি । এ দায় তাকেই নিতে হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কেউ টাকা নিয়ে ঘর দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম তালিকায় থাকলে সেসব নাম বাদ দেওয়া হবে।
সহকারী কমিশনার ভুমি অনুপম দাস অনুপ বলেন অভিযোগের আলোকে সরেজমিনে তদন্ত করে ইউএনও স্যার (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বরাবরে প্রেরণ করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

ট্যাগস

স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়।

জগন্নাথপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:১০:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

মোঃ রনি মিয়া জগন্নাথপুর সংবাদদাতাঃ- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উটেছে।

ভূমিহীন-গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ করে দেয়া হলেও জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ এর তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনের অনিয়মের কারণে তা ভেস্তে গেছে।
যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম ঘরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি ঘরের সুবিধাভোগীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।
স্থানীয় লক্ষ্মী রানী বিশ্বাসের নিজের জায়গা আছে। কিন্তু তার ছেলে মদন বিশ্বাসকে সরকারি ঘর পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন । ধীরা বিশ্বাসেরও জায়গা আছে। কিন্তু তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন টাকার বিনিময়ে তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সাজনা বেগম (তার মেয়ে সৌদি প্রবাসী), জুয়েল মিয়া (তার ভাই সৌদি প্রবাসী), পারুল বেগম (রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে এবং সাত লক্ষ টাকায় জায়গা খেনেন), সুমেনা বেগম (তার বিয়ে হয়েছে সিলেট), সামছুল ডাক্তার (ফার্মেসি ব্যবসা আছে) সহ এমন অনেককেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুড়ি-চানাচুর বিক্রেতা রাখাল দাসের বাড়ি-ঘর নেই। কিন্তু তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কেবল যারা টাকা দিয়েছে তাদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন হতদরিদ্র পরিবারের ২০ জন ভুক্তভোগী। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় তহশিলদার প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নানা অনিয়ম করেছেন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. ছরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন অনিয়ম করেছেন। এটা মেনে নেয়া যায়না।
বাগমনা গ্রামের দুলন মিয়া জানান, তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন এলাকায় গিয়ে যাচাই-বাছাই না করে ঘরে বসে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে অনিয়ম করেছেন। তাকে আইনের আওতায় আনা উচিত।
ঘরের জন্য আবেদনকারী রিপন চন্দ্র শীল বলেন, আমি হতদরিদ্র পরিবারের লোক। গুচ্ছ গ্রামে ঘরের জন্য গত ১৮ মার্চ আবেদন করি। আবেদন করার পর যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তখন তহশিলদার আমার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু পরে আনন্দ বিশ্বাসের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে আমার নাম বাদ দিয়ে তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।
ধীরাজ বিশ্বাস বলেন, আমরা হতদরিদ্র লোক। আমরা টাকা না দিতে পারায় আমাদের নাম বাদ দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন। আমরা হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাফিজ উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই করে তালিকা করেছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযোগের বিষয়টি আমি দেখছি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের কাছে কিছু নেই। যারা তালিকা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে লিখুন।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, আমরা ভূমিহীনদের নামের তালিকা তহশিলদারকে দিয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছেন তহশিলদার। আমাদের দেয়া তালিকা থেকে ১০ টি নাম বাদ দিয়ে নতুন ১০ টি নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এখন শুনেছি সঠিক ভূমিহীনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেননি । এ দায় তাকেই নিতে হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কেউ টাকা নিয়ে ঘর দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম তালিকায় থাকলে সেসব নাম বাদ দেওয়া হবে।
সহকারী কমিশনার ভুমি অনুপম দাস অনুপ বলেন অভিযোগের আলোকে সরেজমিনে তদন্ত করে ইউএনও স্যার (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বরাবরে প্রেরণ করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।