আহমদ আলী হিরন, বিশ্বনাথ থেকেঃ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার প্রখ্যাত চাউলধনী হাওরের লীজ গ্রহীতা কর্তৃক সেচের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করে হাওর শুকিয়ে ইরি বোরো ফসল উৎপাদনে বাঁধার সৃষ্টি করার অভিযোগে হাজার হাজার কৃষক অভিনব পন্থায় হাওরের মাঝে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। চাউলধনী হাওরের বোরো জমিতে চর্তুদিকে ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক আলাদা ব্যানার ফেস্টুন, কৃষি উপকরণ হাতে নিয়ে মিছিল সহকারে হাওরে জমায়েত হতে থাকেন। প্রচন্ড রোধ অপেক্ষা করে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৪কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে সমাবেশে যোগ দেন। স্থানীয় ও সিলেটের সাংবাদিকরা কৃষকদের এমন সমাবেশ দেখতে পায়ে হেঁটে হাওরের মধ্যখানে চলে যান। সকাল ১১টার মধ্যেই সমাবেশস্থলে কয়েক হাজার কৃষক সমবেত হন। আর কোন দাবি নাই, জলাশয়ের লীজ বাতিল চাই, চাউলধনী হাওরের কৃষক বাঁচাও ক্ষতি পূরণ দাও, জলাশয় ভূমির সীমানা নির্ধারণ চাই, বেড়ি বাঁধ ও স্লুইস গেইট নির্মান চাই ইত্যাতি শ্লোগানে পূরো হাওর এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। হাওরের শ্লোগানে পাশের গ্রামের নারী পূরুষরা দাঁড়িয়ে সভাটি প্রত্যক্ষ করেন। হাওর শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষক সমাবেশস্থলে আবেক আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা লীজ বাতিল ও ইজারাদারের শাস্তির জন্য প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেন।
চাউলধনী হাওরের কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক বিশ^নাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল কালামের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত প্রতিবাদ সমাবেশে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা ছমির উদ্দিন। আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব মাষ্টার বাবুল মিয়ার পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশ^নাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক ২বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ অঞ্চলের অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জননেতা মুহিবুর রহমান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট লেখক ও সমাজ বিশ্লেষক এ এইচ এম ফিরোজ আলী, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আমির আলী, দৌলতপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আরিফ উল্লাহ সিতাব, আয়ারল্যান্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি ডা: বদরুল ইসলাম তালুকদার, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, ওয়াব আলী, আযম আলী, সামসুদ্দিন, নজির আহমদ, হাফিজ আরব খান, আশিকুর রহমান, আব্দুল গনি, নজরুল ইসলাম হামদু, মো: সাজ্জাদ আলী, মো: লাল মিয়া, আলতাব হোসেন, নজির আহমদ, মনোয়র হোসেন, আবু তাহের, রুহেল আহমদ কালু, আফজাল হোসেন, আহমদ আলী। সভা পরিচালনা করেন, দৌলতপুর ইউনিয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
সভায় বক্তরা দশঘর মৎসজীবি ভুয়া সমিতির নামে দেয়া জলাশয়ের লীজ বাতিল, হাওরের সীমানা নির্ধারণ, হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, প্রয়োজনীয় পানির সুবিধার্থে খাল-নালা, পুকুর খনন, বেড়ি বাঁধ নির্মাণ এবং সর্ববস্থায় প্রায় ২৫/৩০ হাজার কৃষকের বছরে দুইশত কোটি টাকার ধান রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মৎস, কৃষি, ভূমি মন্ত্রনালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানানো হয়।