ঢাকা ০৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। ম্যানচেস্টার সহকারী হাইকমিশনার এর সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের সৌজন্যে সাক্ষাৎ যুক্তরাজ্যের নর্থ-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফখরুল হোসাইনের সাথে বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের মতবিনিময় নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব ইউকের আত্মপ্রকাশ, সভাপতি ফখরুল হোসাইন সম্পাদক নুরুল আমিন ৪০ কেজি ওজনের হলি রামাদ্বান ফ্যামেলি ফুড প্যাক বিতরণ করল আননিয়ামাহ উইমেন্স এডুকেশন ট্রাস্ট ইউ কে যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ en ıyı bahis siteleri’deki En Büyük Yalan

মেঘনায় জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ নিষেধাজ্ঞা শেষে ৫ নভেম্বর ভোর থেকে জেলেরা ইলিশ মাছ ধরতে নেমেছে মেঘনা নদীতে। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেরা। আশা ছিল ওই সময় অন্তত কিছু ইলিশ ধরা পড়বে। এরপরও নদীতে ইলিশের দেখা নাই। বাজারেও মিলছে না মানুষের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। যা পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই ছোট। সেই ইলিশের দামও আবার সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে।
সবার জানা কথা, সাগরের ইলিশের তুলনায় নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি। সাগরের ইলিশের স্বাদ কিছুটা লবণাক্ত হয়ে থাকে, নদীতে এসে স্রোতের প্রতিকূলে সাঁতার কেটে ইলিশ উজানের দিকে চলে আসে বলে তার গায়ের লবণ ঝরে যায়, ফলে ইলিশের আকার ও স্বাদ দুটোই বাড়ে। এ কারণে সাগরের চেয়ে নদীর ইলিশের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই জনমনে প্রশ্ন- ‘ ২২ দিনতো সময় নদীতে মাছ ধরা নিষেধ ছিলো, আর কবে দেখা মিলবে সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের ?’
লক্ষ্মীপুরের রামগতি কমলনগর সদর ও রায়পুর উপজেলার মেঘনা পাড়ের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে পানির স্রোত প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই সাগর থেকে ঝাঁক বেঁধে ইলিশ নদীর মোহনায় আসতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নদীর গতিপথ পরিবর্তন, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব, নদীর মধ্যে জেগে ওঠা নতুন চর―এই তিন কারণে নদীতে প্রয়োজনীয় স্রোত নেই। আর এ কারণেই প্রবল বৃষ্টি ও গত ২২ দিন ধরা বন্ধ থাকার পরেও এই ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা নাই।
এদিকে, উপকূলীয় নদ-নদীতেও আর আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না। উত্তাল মেঘনা-তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েও ইলিশসহ কোনও মাছেরই দেখা মিলছে না জেলেদের জালে। তবে জেলেদের দাবি, সাগরে প্রচুর ইলিশ রয়েছে।
ইলিশের স্বর্গরাজ্য বলে খ্যাত রায়পুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর হাজিমারা ও আলতাফ মাস্টারের ঘাট এলাকায় প্রত্যাশিত ইলিশ মাছ নেই। তবে গত ২২ দিন ধরা বন্ধ থাকার পর গত দুইদিন নদীতে কিছু ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানা গেছে।
রায়পুরের হাজিমারার ইলিশ ব্যবসায়ী (আড়তদার) জুলহাস মোল্লা মোবাইলে জানিয়েছেন, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কিছু জেলে নদীতে সারা বছরই বিভিন্ন মাছের পোনা ধরে। এর মধ্যে ইলিশের পোনাও জালে ধরা পড়ে। এতে ইলিশের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়ার এটিও একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।
রায়পুর শহরের বিভিন্ন বাজারেও গত দুই দিন কাঁচকি মাছের সঙ্গে ইলিশের পোনা দেদারসে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফলে ব্যাপক হারে মাছের পোনা নিধনের ঘটনায় নদীতে ইলিশের পরিমাণ একেবারেই কম।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আধা কেজি ওজনের বেশি বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ খুবই কম। গত ২২ দিন আগের তুলনায় এবার বড় সাইজের ইলিশ নাই। তবে ছোট সাইজের ইলিশের সরবরাহ ভালো। জাটকা সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকা কেজি দরে।
২২ দিন নিষেধাজ্ঞার পর-ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় ইলিশ মাছের আড়তগুলোয় এখন ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন।
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, প্রতিবছরের জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাস জুড়ে পুরোটাই ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মৌসুমে জেলেরা দলে দলে জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে নামেন। অতীতের মতো এবছরও তারা জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে গেছেন। কিন্তু জালে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে না। এ কারণেই ইলিশের মোকাম বলে পরিচিত রায়পুরের জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীরা অনেকটা হতাশ।’
স্থানীয় একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, মেঘনা উপকূলীয় নদীতে আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না। মোকামে গত কয়েক দিনে ইলিশ সরবরাহের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
রায়পুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে চর পড়ার কারণে সাগর ও নদ-নদীতে এখন আর আগের মতো মাছ ধরা পড়ছে না। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সাগরে প্রচুর মাছ আছে। আশা করা যায়, শিগগিরই কোনও এক সময় নদীতেও জেলেদের জালে বড় ইলিশ ধরা পড়বে।
এছাড়াও জাটকা সংরক্ষণে এবং প্রজননের সুযোগ দিয়ে-১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছিলো ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। এ ২২ দিন রায়পুরসহ লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ ছিলো। এ সময়ে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া এই ২২ দিন জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়।
ট্যাগস

স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়।

মেঘনায় জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ।

আপডেট সময় ০৪:৪২:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ নভেম্বর ২০২০
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ নিষেধাজ্ঞা শেষে ৫ নভেম্বর ভোর থেকে জেলেরা ইলিশ মাছ ধরতে নেমেছে মেঘনা নদীতে। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেরা। আশা ছিল ওই সময় অন্তত কিছু ইলিশ ধরা পড়বে। এরপরও নদীতে ইলিশের দেখা নাই। বাজারেও মিলছে না মানুষের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। যা পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই ছোট। সেই ইলিশের দামও আবার সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে।
সবার জানা কথা, সাগরের ইলিশের তুলনায় নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি। সাগরের ইলিশের স্বাদ কিছুটা লবণাক্ত হয়ে থাকে, নদীতে এসে স্রোতের প্রতিকূলে সাঁতার কেটে ইলিশ উজানের দিকে চলে আসে বলে তার গায়ের লবণ ঝরে যায়, ফলে ইলিশের আকার ও স্বাদ দুটোই বাড়ে। এ কারণে সাগরের চেয়ে নদীর ইলিশের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই জনমনে প্রশ্ন- ‘ ২২ দিনতো সময় নদীতে মাছ ধরা নিষেধ ছিলো, আর কবে দেখা মিলবে সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের ?’
লক্ষ্মীপুরের রামগতি কমলনগর সদর ও রায়পুর উপজেলার মেঘনা পাড়ের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে পানির স্রোত প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই সাগর থেকে ঝাঁক বেঁধে ইলিশ নদীর মোহনায় আসতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নদীর গতিপথ পরিবর্তন, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব, নদীর মধ্যে জেগে ওঠা নতুন চর―এই তিন কারণে নদীতে প্রয়োজনীয় স্রোত নেই। আর এ কারণেই প্রবল বৃষ্টি ও গত ২২ দিন ধরা বন্ধ থাকার পরেও এই ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা নাই।
এদিকে, উপকূলীয় নদ-নদীতেও আর আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না। উত্তাল মেঘনা-তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়েও ইলিশসহ কোনও মাছেরই দেখা মিলছে না জেলেদের জালে। তবে জেলেদের দাবি, সাগরে প্রচুর ইলিশ রয়েছে।
ইলিশের স্বর্গরাজ্য বলে খ্যাত রায়পুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর হাজিমারা ও আলতাফ মাস্টারের ঘাট এলাকায় প্রত্যাশিত ইলিশ মাছ নেই। তবে গত ২২ দিন ধরা বন্ধ থাকার পর গত দুইদিন নদীতে কিছু ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানা গেছে।
রায়পুরের হাজিমারার ইলিশ ব্যবসায়ী (আড়তদার) জুলহাস মোল্লা মোবাইলে জানিয়েছেন, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কিছু জেলে নদীতে সারা বছরই বিভিন্ন মাছের পোনা ধরে। এর মধ্যে ইলিশের পোনাও জালে ধরা পড়ে। এতে ইলিশের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়ার এটিও একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।
রায়পুর শহরের বিভিন্ন বাজারেও গত দুই দিন কাঁচকি মাছের সঙ্গে ইলিশের পোনা দেদারসে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফলে ব্যাপক হারে মাছের পোনা নিধনের ঘটনায় নদীতে ইলিশের পরিমাণ একেবারেই কম।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আধা কেজি ওজনের বেশি বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ খুবই কম। গত ২২ দিন আগের তুলনায় এবার বড় সাইজের ইলিশ নাই। তবে ছোট সাইজের ইলিশের সরবরাহ ভালো। জাটকা সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকা কেজি দরে।
২২ দিন নিষেধাজ্ঞার পর-ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় ইলিশ মাছের আড়তগুলোয় এখন ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন।
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, প্রতিবছরের জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাস জুড়ে পুরোটাই ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মৌসুমে জেলেরা দলে দলে জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে নামেন। অতীতের মতো এবছরও তারা জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে গেছেন। কিন্তু জালে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে না। এ কারণেই ইলিশের মোকাম বলে পরিচিত রায়পুরের জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীরা অনেকটা হতাশ।’
স্থানীয় একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, মেঘনা উপকূলীয় নদীতে আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না। মোকামে গত কয়েক দিনে ইলিশ সরবরাহের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
রায়পুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে চর পড়ার কারণে সাগর ও নদ-নদীতে এখন আর আগের মতো মাছ ধরা পড়ছে না। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সাগরে প্রচুর মাছ আছে। আশা করা যায়, শিগগিরই কোনও এক সময় নদীতেও জেলেদের জালে বড় ইলিশ ধরা পড়বে।
এছাড়াও জাটকা সংরক্ষণে এবং প্রজননের সুযোগ দিয়ে-১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছিলো ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। এ ২২ দিন রায়পুরসহ লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ ছিলো। এ সময়ে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া এই ২২ দিন জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়।