ঢাকা ০৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সমাজ পরিবর্তনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। স্কানথর্পের নব নির্বাচিত এমপির সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের মতবিনিময়। ম্যানচেস্টার সহকারী হাইকমিশনার এর সাথে নর্থ বাংলা প্রেসক্লাবের সৌজন্যে সাক্ষাৎ যুক্তরাজ্যের নর্থ-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফখরুল হোসাইনের সাথে বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের মতবিনিময় নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব নর্থ বাংলা প্রেসক্লাব ইউকের আত্মপ্রকাশ, সভাপতি ফখরুল হোসাইন সম্পাদক নুরুল আমিন ৪০ কেজি ওজনের হলি রামাদ্বান ফ্যামেলি ফুড প্যাক বিতরণ করল আননিয়ামাহ উইমেন্স এডুকেশন ট্রাস্ট ইউ কে যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ যুক্তরাজ্যের উইলশ্যায়ার কাউন্টির ডেপুটি লেফট্যানান্ট হলেন বিশ্বনাথের মাকরাম আলী আফরুজ

যন্ত্রীসভার বুদ্ধি কম!

যন্ত্রীসভার লোকেরা সব সময় এসি লাগান শরীরে। দেশের চিন্তায় শরীরে হরদম ঘাম ছোটে। কি করে দেশের উন্নয়ন হবে, দেশের মানুষ সুখী হবে, এতে করে পকেটে টুপাইস ঢুকবে এসব চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুম পর্যন্ত হয় না। প্রত্যেক যন্ত্রীর বাসায়,অফিসে,গাড়িতে, সভাকক্ষে,এমনকি পুরো বাথরুম,টয়লেট সব এসির আওতায় এনেছেন। যন্ত্রীরা চিন্তা করে দেখেছেন,গরমে তাদের খামারের গরু ছাগল হাঁস মোরগ কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে এবার নদীর ড্রেজিংয়ের বাজেট পাস হলে সে বাজেট থেকে দু’শো এসি ম্যানেজ করবেন। গতবছর গ্রামের বাড়িতে একজন যন্ত্রীর মার্কেটে পঞ্চাশটি এসি লাগিয়ে নিয়েছেন। তার এলাকার উন্নয়নে পাশ হওয়া ১০ কোটি টাকা থেকে। এ নিয়ে মিডিয়াপাড়ায় হইচই পড়েছিলো। কিচ্ছু হয়নি। কি করে হবে! যন্ত্রী যন্ত্রী মাসতুতো ভাই। কে কার খবর রাখে! খবর পেলেতো মিথ্যা, গুজব, বানোয়াট ইত্যাদি বিশেষণ দিয়ে উড়িয়ে দেয়া যন্ত্রীদের তকমা হয়ে গেছে।
নদীভাঙ্গা মানুষের কষ্ট কেউ দেখে না। খোঁজ নেয় না। প্রতিবছর নদীভাঙ্গা মানুষের সংখ্যা বাড়ে, সরকার নদীভাঙ্গাদের উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ফলাফল জিরো। তাহলে টাকা যায় কোথায়! নদী মানুষকে ধাবড়ায়, সর্বগ্রাসী করে, নদী সর্বনাশী হবে নাকি মানুষ নদীকে শাসন করবে! যন্ত্রীরা ভাবে নদীর সাথে পাল্লা দেয়ার, টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। আইলা, সিডর, নাসরিন, ঘূর্ণি, তুফান কিবা করোনা এসব এলে মোকাবেলা করার সক্ষমতা যন্ত্রীসভার আছে। তাও পর্যাপ্ত সক্ষমতা! কিন্তু নদীশাসনের দূরহ চিন্তাটুকুও আমাদের নেই।
নদীতে রাতদিন করে বালুখেকোরা উন্নত পর্যায়ের মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায়। সেখান থেকে যন্ত্রী-কেমপি নেতা-পেতার পকেটে টাকা ঢোকে। হায়! তারা বালুচুরি করে নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। কিন্তু সে নদীর ড্রেজিং করতেও আমাদের যন্ত্রীসভার সরকার কোটি কোটি টাকা বাজেট পাশ করে। একদিকে সরকারি টাকা অন্যদিকে আলু বিক্রির টাকা,দুদিকের টাকায় লালে লাল যন্ত্রীরা, কেমপি, নেতা-পেতারা। এতো টাকা খরচ করেও ফলাফল আসে না। নদী ভাঙ্গন, নদীর স্রোত সোজা হয় না। যারা রাতের আঁধারে নদী থেকে বালু কাটে। তাদের সুন্দর করে দেখিয়ে দিলেই তো আর বাজেট বরাদ্দ লাগে না। তারা তো এমনিতেই বালু চুরি করেন। সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকায় আর হরিলুট বসে না। কারো মাথায় কি এসব ঢোকে না? ঢুকলে সমস্যা, যন্ত্রীদের বিদেশে বাড়ি করার চিন্তা, বিমান কেনার স্বপ্ন, মিল কলকারখানা করার চিন্তা ফিকে হয়ে যাবে। যন্ত্রীরা কোন কারণে যদি একবার ক্ষমতা পায় তাহলে সরকারপ্রধানকে তৈল মাখিয়ে অধিদপ্তরের গুষ্টি-গাড়া উদ্ধার করে। বৃদ্ধ বয়সেও ষোড়শীর যৌবনে উঁকি মারেন। চিন্তা করেন পরে যদি না পাই! আমার চেনা একজন মাত্র ৮ মাসের জন্য যন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এতে করেই ঢাকার বনানীতে বাড়ির মালিক বনে গেছেন। আরোতো বিভিন্ন খবর আছেই।
সাধারণ জনসভা মনে করে কেমপিদের মধ্যে সবচেয়ে চিন্তাশীল আধিপত্যবাদী চৌকস ব্যক্তিকে যন্ত্রিসভায় ঢোকানো হয়। প্রকৃত অর্থে তা নয়, কিছু কিছু লোভী, ঠোঁটকাটা, মূর্খ প্রকৃতির লোকও যন্ত্রীসভার সদস্য হয়ে যান কপাল গুনে।
একবার মেঘনার পূর্ব কূলের কমলনগর সাহেবেরহাট, মাতাব্বরহাট লুধুয়া ভাঙ্গন রোধে যন্ত্রীসভায় ষোল’শ কোটি টাকা বাজেট পাস করে। প্রতি অর্থবছরে দু’শো কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজ শুরু হলো মাতাব্বরহাটে মাত্র এক কিলোমিটার। যদি সেনাবাহিনী দ্বারা নির্মিত রামগতি আলেকজান্ডার বেড়ির সাথে লাগিয়ে শুরু করে এক দিক থেকে বেড়ি করে আসতো তাহলে এতদিনে আর ১০ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতো। কিন্তু তা না করে মাঝখান থেকে এক কিলোমিটার বেঁধে 200 কোটি টাকার কাজ শেষ করে এ থেকে দায়মুক্ত হয়েছে ঠিকাদার। এদিকে আর সামান্য বাকি আছে বেড়ি ভেঙে নদীতে বিলিন হওয়ার। অন্য দিকে বেড়ির দুপাশ ইউ আকৃতির মতো করে নদী আরো প্রায় কয়েক কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে গেছে। ভেঙে নিয়ে গেছে মানুষের স্বপ্ন, আবেগ, ভালোবাসা, অনুভূতি। দু’বার আনিসুর রহমান নামের একজন যন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি দেখে শুনে কি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন! আল্লাহ মালুম। কিন্তু এখনো ভাঙছে নদী। তাহলে যন্ত্রীসভায় তিনি কি উত্থাপন করলেন? কি ব্যবস্থা নিলেন আজ তিন বছরে?
কাজের আগেও তো এই যন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি কেন আলেকজান্ডারের সাথে মিলিয়ে কাজ শুরু করতে​ বলেননি? সেনাবাহিনীর কাজ নিখুঁত ও সুন্দর মজবুত হওয়ায় আলেকজান্ডারের নদীর স্রোতের মুখ ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। কেন যন্ত্রীসভায় সেনাবাহিনীকে না দিয়ে চোরা অসাধু ঠিকাদারকে দিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করালেন? যন্ত্রীদের টাকার কি লোভ! শেষে স্থানীয় কেমপি নেতা গরু-ছাগল তো আছেই। তারা সেনাবাহিনীর কাছে ঘেঁষতে পারেনি বলে ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করিয়েছে ভাগবাটোয়ারা করার জন্য। সে কারণেই তো মাতাব্বরহাট আজ নদী গর্ভে বিলিন। অন্যদিকে চোর বদমাশ সেনাবাহিনীর কাছে না ঘেঁষাতে সে বেড়ি আজ পর্যটন কেন্দ্র। লজ্জা থাকা চাই যন্ত্রীদের। আর কেমপি, গরু, ছাগলের গলায় পাদুকামালা পরানো দরকার এই কারণে- যে যন্ত্রীরা দূরের, আমরা স্থানীয়, নদী ভাঙলেই আমরাই উদ্ধাস্তু হই। আমরা ও আমাদের আত্মীয় স্বজন গৃহহারা হয়। তাহলে যেভাবে পারি আলেকজান্ডারের মতো মজবুত করে​ বেড়ি বানিয়ে নিব। এসব চিন্তা নেই স্থানীয় নেতা গরু ছাগলের!
আমার বলতে ইচ্ছে করে -‘আরে শালারা যদি ভূমি না থাকে, মানুষ না থাকে, এলাকা না থাকে, তোরা আর নেতাগিরি করবি কি দিয়ে? কেমপি,নেতা-পেতা গরু ছাগল হবি কি দিয়ে? কথা ‘ক’ চিটিং, তোরা দেশের জনগণকে জবাই করে দিছত।
তাহলে বুদ্ধির কাজ হল-নদীর ড্রেজিং করতে বরাদ্দ, বাজেট কিছুই লাগবে না। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবে তাদের নকশা করে বালু তোলা বৈধ করে দিলেই হয়। প্রয়োজনে পার্সেন্টিজ অনুযায়ী সরকারের কোষাগারে টাকাও নেয়া যেতে পারে তাদের কাছ থেকে।এতে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে। অন্যদিকে নদী ভাঙ্গন রোধে বেড়িবাধ ঠিকাদার ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কাউকে না দিয়ে সরকারি বাহিনী সেনাবাহিনীকে দিয়ে করালে কাজ মজবুত হবে। টাকা কাজে লাগবে। জনগণ উপকৃত হবে। নদীও শাসন হবে।
***​
চলবে
লেখকঃ কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক।​
সপাদকঃ আবীর আকাশ জার্নাল
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সমাজ পরিবর্তনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম।

যন্ত্রীসভার বুদ্ধি কম!

আপডেট সময় ০৩:১৩:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
যন্ত্রীসভার লোকেরা সব সময় এসি লাগান শরীরে। দেশের চিন্তায় শরীরে হরদম ঘাম ছোটে। কি করে দেশের উন্নয়ন হবে, দেশের মানুষ সুখী হবে, এতে করে পকেটে টুপাইস ঢুকবে এসব চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুম পর্যন্ত হয় না। প্রত্যেক যন্ত্রীর বাসায়,অফিসে,গাড়িতে, সভাকক্ষে,এমনকি পুরো বাথরুম,টয়লেট সব এসির আওতায় এনেছেন। যন্ত্রীরা চিন্তা করে দেখেছেন,গরমে তাদের খামারের গরু ছাগল হাঁস মোরগ কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে এবার নদীর ড্রেজিংয়ের বাজেট পাস হলে সে বাজেট থেকে দু’শো এসি ম্যানেজ করবেন। গতবছর গ্রামের বাড়িতে একজন যন্ত্রীর মার্কেটে পঞ্চাশটি এসি লাগিয়ে নিয়েছেন। তার এলাকার উন্নয়নে পাশ হওয়া ১০ কোটি টাকা থেকে। এ নিয়ে মিডিয়াপাড়ায় হইচই পড়েছিলো। কিচ্ছু হয়নি। কি করে হবে! যন্ত্রী যন্ত্রী মাসতুতো ভাই। কে কার খবর রাখে! খবর পেলেতো মিথ্যা, গুজব, বানোয়াট ইত্যাদি বিশেষণ দিয়ে উড়িয়ে দেয়া যন্ত্রীদের তকমা হয়ে গেছে।
নদীভাঙ্গা মানুষের কষ্ট কেউ দেখে না। খোঁজ নেয় না। প্রতিবছর নদীভাঙ্গা মানুষের সংখ্যা বাড়ে, সরকার নদীভাঙ্গাদের উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ফলাফল জিরো। তাহলে টাকা যায় কোথায়! নদী মানুষকে ধাবড়ায়, সর্বগ্রাসী করে, নদী সর্বনাশী হবে নাকি মানুষ নদীকে শাসন করবে! যন্ত্রীরা ভাবে নদীর সাথে পাল্লা দেয়ার, টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। আইলা, সিডর, নাসরিন, ঘূর্ণি, তুফান কিবা করোনা এসব এলে মোকাবেলা করার সক্ষমতা যন্ত্রীসভার আছে। তাও পর্যাপ্ত সক্ষমতা! কিন্তু নদীশাসনের দূরহ চিন্তাটুকুও আমাদের নেই।
নদীতে রাতদিন করে বালুখেকোরা উন্নত পর্যায়ের মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায়। সেখান থেকে যন্ত্রী-কেমপি নেতা-পেতার পকেটে টাকা ঢোকে। হায়! তারা বালুচুরি করে নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। কিন্তু সে নদীর ড্রেজিং করতেও আমাদের যন্ত্রীসভার সরকার কোটি কোটি টাকা বাজেট পাশ করে। একদিকে সরকারি টাকা অন্যদিকে আলু বিক্রির টাকা,দুদিকের টাকায় লালে লাল যন্ত্রীরা, কেমপি, নেতা-পেতারা। এতো টাকা খরচ করেও ফলাফল আসে না। নদী ভাঙ্গন, নদীর স্রোত সোজা হয় না। যারা রাতের আঁধারে নদী থেকে বালু কাটে। তাদের সুন্দর করে দেখিয়ে দিলেই তো আর বাজেট বরাদ্দ লাগে না। তারা তো এমনিতেই বালু চুরি করেন। সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকায় আর হরিলুট বসে না। কারো মাথায় কি এসব ঢোকে না? ঢুকলে সমস্যা, যন্ত্রীদের বিদেশে বাড়ি করার চিন্তা, বিমান কেনার স্বপ্ন, মিল কলকারখানা করার চিন্তা ফিকে হয়ে যাবে। যন্ত্রীরা কোন কারণে যদি একবার ক্ষমতা পায় তাহলে সরকারপ্রধানকে তৈল মাখিয়ে অধিদপ্তরের গুষ্টি-গাড়া উদ্ধার করে। বৃদ্ধ বয়সেও ষোড়শীর যৌবনে উঁকি মারেন। চিন্তা করেন পরে যদি না পাই! আমার চেনা একজন মাত্র ৮ মাসের জন্য যন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এতে করেই ঢাকার বনানীতে বাড়ির মালিক বনে গেছেন। আরোতো বিভিন্ন খবর আছেই।
সাধারণ জনসভা মনে করে কেমপিদের মধ্যে সবচেয়ে চিন্তাশীল আধিপত্যবাদী চৌকস ব্যক্তিকে যন্ত্রিসভায় ঢোকানো হয়। প্রকৃত অর্থে তা নয়, কিছু কিছু লোভী, ঠোঁটকাটা, মূর্খ প্রকৃতির লোকও যন্ত্রীসভার সদস্য হয়ে যান কপাল গুনে।
একবার মেঘনার পূর্ব কূলের কমলনগর সাহেবেরহাট, মাতাব্বরহাট লুধুয়া ভাঙ্গন রোধে যন্ত্রীসভায় ষোল’শ কোটি টাকা বাজেট পাস করে। প্রতি অর্থবছরে দু’শো কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজ শুরু হলো মাতাব্বরহাটে মাত্র এক কিলোমিটার। যদি সেনাবাহিনী দ্বারা নির্মিত রামগতি আলেকজান্ডার বেড়ির সাথে লাগিয়ে শুরু করে এক দিক থেকে বেড়ি করে আসতো তাহলে এতদিনে আর ১০ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতো। কিন্তু তা না করে মাঝখান থেকে এক কিলোমিটার বেঁধে 200 কোটি টাকার কাজ শেষ করে এ থেকে দায়মুক্ত হয়েছে ঠিকাদার। এদিকে আর সামান্য বাকি আছে বেড়ি ভেঙে নদীতে বিলিন হওয়ার। অন্য দিকে বেড়ির দুপাশ ইউ আকৃতির মতো করে নদী আরো প্রায় কয়েক কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে গেছে। ভেঙে নিয়ে গেছে মানুষের স্বপ্ন, আবেগ, ভালোবাসা, অনুভূতি। দু’বার আনিসুর রহমান নামের একজন যন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি দেখে শুনে কি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন! আল্লাহ মালুম। কিন্তু এখনো ভাঙছে নদী। তাহলে যন্ত্রীসভায় তিনি কি উত্থাপন করলেন? কি ব্যবস্থা নিলেন আজ তিন বছরে?
কাজের আগেও তো এই যন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি কেন আলেকজান্ডারের সাথে মিলিয়ে কাজ শুরু করতে​ বলেননি? সেনাবাহিনীর কাজ নিখুঁত ও সুন্দর মজবুত হওয়ায় আলেকজান্ডারের নদীর স্রোতের মুখ ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। কেন যন্ত্রীসভায় সেনাবাহিনীকে না দিয়ে চোরা অসাধু ঠিকাদারকে দিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করালেন? যন্ত্রীদের টাকার কি লোভ! শেষে স্থানীয় কেমপি নেতা গরু-ছাগল তো আছেই। তারা সেনাবাহিনীর কাছে ঘেঁষতে পারেনি বলে ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করিয়েছে ভাগবাটোয়ারা করার জন্য। সে কারণেই তো মাতাব্বরহাট আজ নদী গর্ভে বিলিন। অন্যদিকে চোর বদমাশ সেনাবাহিনীর কাছে না ঘেঁষাতে সে বেড়ি আজ পর্যটন কেন্দ্র। লজ্জা থাকা চাই যন্ত্রীদের। আর কেমপি, গরু, ছাগলের গলায় পাদুকামালা পরানো দরকার এই কারণে- যে যন্ত্রীরা দূরের, আমরা স্থানীয়, নদী ভাঙলেই আমরাই উদ্ধাস্তু হই। আমরা ও আমাদের আত্মীয় স্বজন গৃহহারা হয়। তাহলে যেভাবে পারি আলেকজান্ডারের মতো মজবুত করে​ বেড়ি বানিয়ে নিব। এসব চিন্তা নেই স্থানীয় নেতা গরু ছাগলের!
আমার বলতে ইচ্ছে করে -‘আরে শালারা যদি ভূমি না থাকে, মানুষ না থাকে, এলাকা না থাকে, তোরা আর নেতাগিরি করবি কি দিয়ে? কেমপি,নেতা-পেতা গরু ছাগল হবি কি দিয়ে? কথা ‘ক’ চিটিং, তোরা দেশের জনগণকে জবাই করে দিছত।
তাহলে বুদ্ধির কাজ হল-নদীর ড্রেজিং করতে বরাদ্দ, বাজেট কিছুই লাগবে না। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবে তাদের নকশা করে বালু তোলা বৈধ করে দিলেই হয়। প্রয়োজনে পার্সেন্টিজ অনুযায়ী সরকারের কোষাগারে টাকাও নেয়া যেতে পারে তাদের কাছ থেকে।এতে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে। অন্যদিকে নদী ভাঙ্গন রোধে বেড়িবাধ ঠিকাদার ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কাউকে না দিয়ে সরকারি বাহিনী সেনাবাহিনীকে দিয়ে করালে কাজ মজবুত হবে। টাকা কাজে লাগবে। জনগণ উপকৃত হবে। নদীও শাসন হবে।
***​
চলবে
লেখকঃ কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক।​
সপাদকঃ আবীর আকাশ জার্নাল