টাইম ডেস্কঃ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যুক্তরাজ্যে যাতে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ ভয়ংকর না হয় তার জন্য জনগনকে বার-বার অনুরুধ করছেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য। কিন্তু বেশীরভাগ জনগণ আর আগের মতো সরকারের কোনো আইন বা অনুরুধ মানতে নারাজ আর তাই আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি সেলফ আইসোলেশন বা গৃহবন্দিত্ব ভঙ্গ করলে তাকে ১০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার এমনই একটি নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন। বৃটেনে মে মাসের পর এখন দিনি দিন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একদিনে এ সংখ্যা রেকর্ড ৪৪২২-তে পৌঁছেছে। অনলাইন ডেইলি মেইল এ খবর দিয়ে বলছে, এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় লকডাউন দেয়া হবে কিনা তা নিয়ে মন্ত্রীদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে জনসনের। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় লকডাউন দিলে অর্থনীতি একেবারে বসে যাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীরা। ফলে প্রধানমন্ত্রী জনসন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি নতুন লিগ্যাল ডিউটি তৈরি করছেন। এর অধীনে কারো দেহে করোনা ভাইরাস পজেটিভ দেখা দিলে তিনি বাড়ির ভিতরেই থাকবেন। যদি বাড়ি থেকে বের হন তাহলে তাকে জরিমানা করা হবে। এর অধীনে কম আয়ের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ, যারা ঘরে বসে কাজ করতে পারেন না, তাদেরকে বাধ্যতামুলক সেলফ আইসোলেশনে পাঠানো হলে ৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে। এর অধীনে যদি কেউ নির্দেশ লঙ্ঘন করেন তাহলে তাকে শুরুতে এক হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হবে। তারপরও যদি তিনি একই ঘটনা ঘটান তাহলে তা বাড়িয়ে ১০ হাজার পাউন্ড করা হবে। বৃটেনে করোনা আবার ভয়াল থাবা বসালেও সাধারণ মানুষজনের মধ্যে তেমন কুচপরোয়া নেই। শনিবারও ক্যামডেন, লন্ডন এবং নটিংহ্যামে স্ট্যাবলস মার্কেটে দেখা গেছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। আবার দরজা বন্ধ করার আগে তারা যে যেভাবে পারেন পাব-এ ঢুকে সময় কাটানোর চেষ্টা করেন। নটিংহ্যামে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সেখানে ডাকা হয়। তারা লোকজনকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করেন। পুলিশ এবং কমিউনিটি প্রটেকশনগুলো প্রহরা দিচ্ছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি আবার দ্রুত গতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে ডাউনিং স্ট্রিটে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সরকারের বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টারা দ্বিতীয় লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু এর বিরোধিতা করেছেন অর্থমন্ত্রী চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। তার নেতৃত্বে মন্ত্রীরা বলেছেন, দ্বিতীয় লকডাউন দেয়া হলে অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে। আগামী মঙ্গলবার নতুন পদক্ষেপ নিয়ে জাতির সামনে টেলিভিশনে হাজির হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
বরিস জনসন জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন আমাদের সবার সহযোগিতায় দেশকে আরেকটি ভয়াবহ লকডাউন থেকে বিরত রাখতে চাই কারন এধরণের লকডাউন পরমাণু অস্ত্রের চেয়েও ভয়ংকর।