ঢাকা সংবাদদাতাঃ ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৭/ই ইস্কাটন গার্ডেন, বিটিসিএল ভবন এর সামনে ক্যাজুয়েল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি এর আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি বিটিসিএল এ কর্মরত ক্যাজুয়েল শ্রমিকদের চাকুরি স্থায়ীকরন এর দাবীতে ১লা সেপ্টেম্বর হইতে অধ্যবদি লাগাতার অনড় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ক্যাজুয়েল শ্রমিকরা।
ক্যাজুয়েল শ্রমিকদের দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত ক্যাজুয়েল শ্রমিক কর্মচারীদের স্থায়ীকরনের বিষয় নির্দেশনা থাকলেও বিটিসিএল কতৃর্পক্ষ তা কার্যকর না করে তারা আসছে এদেরকে চিনিনা এরা তাদের শ্রমিক না। শ্রমিকরা দাবী করেন বিটিসিএল এর এমডি তাদের চেনার কোন প্রয়োজন মনে করেন না। আর চিনবে কি করে গ্রামগঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে বিটিসিএল স্যারদের আন্ডারে কাজ করি তারা তো চিনেন।
যাদের আন্ডারে কাজ করেন তারা বলছেন, আমাদের ছাড়া তারা অচল আমরা কাজ না করলে কোন কাজ হয় না গ্রাহকরা সেবা পায় না।
বিটিসিএল কতৃর্পক্ষ বলছে, তাদের আমাদের প্রয়োজন নেই। বিটিসিএল এ পর্যন্ত শূন্য পদ থাকার পরেও সারা দেশে তিন শতাধিক ক্যাজুয়াল শ্রমিক সরকারী রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে কম্পিউটার অপারেটর, অপটিক্যাল ফাইবার, কপার ক্যাবল জয়েন্টার, টেলিফোন, সুইচরুম জেনারেটর ব্যাটারী কমীর্, সহকারী লাইনম্যান, অফিস সহকারী, মটরগাড়ী চালক, পাচক, প্রহরী, পরিচ্ছন্ন কর্মী ও বিভিন্ন পদে অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় বিনা বেতনে কাজ করে আসছি। আমরা গ্রাহকের সেবা দিলে তারা আমাদের যে বখসিস দেয় তা দিয়ে আমরা কোন রকম মানবেতর জীবনযাপন করছি। এমনকি ছুটির দিনগুলোতে রমজান ও মহামারী বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে আমরা কর্মস্থলে কাজ করে আসছি।
ক্যাজুয়েল শ্রমিকরা বলেন, আমরা তাহলে কি করে ১২/১৫ বছর যাবত কাজ করে আসছি বিটিসিএল অস্থায়ী নিয়োগ পত্র ও আইডিকার্ড সহকারে আমরা কিন্তু নেই কোন বেতন কাঠামো ও চাকরীগত নিশ্চয়তা। ইতি মধ্যে যাদের বেতন বন্ধ হয়েছে আজ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় থাকার উপক্রম হয়েছে, লঙ্ঘিত হচ্ছে মৌলিক অধিকার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিটিসিএল অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত ও আইডিকার্ড সহকারে আমরা এখানে অবস্থান কর্মসুচি পালন করে আসছি।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখোরিত করে রাখছে বিটিসিএল ভবন এলাকা। এদের কান্নায় ভারী হচ্ছে রাজধানীর আকাশ, বাতাস, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে অনেক শ্রমিকরা, না খেয়ে দিন যাপন করছেন অনেক শ্রমিকরা তার পরেও বিটিসিএল কতৃর্পক্ষের একটুও টনক নড়েনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছি। আমাদের সাথে মহিলা শ্রমিকরা রয়েছে। বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ভবনের ভিতরে ওয়াস রুমে পর্যন্ত যেতে দেয় না। আমাদের প্রতি অমানবিক আচরন করা হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্নভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছি। যতদিন পর্যন্ত আমাদের চাকুরী স্থায়ী করণ না করা হবে ততদিন পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে দাবী আদায় না হলে প্রয়োজনে লাশ হয়ে বাড়ী ফিরব। এখানে আমরা সারা দেশে ৬৪ জেলায় কর্মরত ক্যাজুয়েল শ্রমিক রয়েছি।এই পর্যন্ত বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে দাবী নিয়ে কোন আলাপ আলোচনায় বসেনি। এমনকি বিটিসিএল এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন থাকা সত্বেও পাওয়া যায় নাই কোন আশার বাণী। তাই গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে মাননীয় সচিব মহাদয় বরাবর একটি চাকুরী স্থায়ী করণের জন্য আবেদন পত্র জমা দিয়েছি। তার কোন উত্তর পেলাম না। এই সকল পদ গুলির চাকরী রাজস্ব খাতে স্থায়ী নিয়োগের দাবীতে সাংবাদিকদের সাথে আন্দোলনরত শ্রমিকরা এই সকল কথা তুলে ধরেন। শ্রমিকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহদয়, সচিব মহদয়, বিটিসিএল এর এমডি মহোদয় নিকট সবিনয় অনুরোধ এই সকল শ্রমিকদের দাবী গুলো মেনে নেওয়া হোক। কারণ তারা তো আমাদের দেশের
নাগরিক। তাদের চাকুরীর বয়স ১২বছর,১৫ বছর ২০ বছর জীবন থেকে চলে গেলে আর কি থাকে। অভিজ্ঞমহল সাধারণ শ্রমিকদের এই সকল বিবেচনা করে দেখবেন কি? এসপিএন বাংলা টিভিতে দেওয়া আন্দোলনরত শ্রমিকরা তাদের বিভিন্ন দাবী সংক্রান্ত নিয়ে ভিডিও ধারণ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার ও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রচার করা সত্বেও পাচ্ছে না কোন প্রতিকার। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যারা: মোঃ আমজাদ হোসেন রাজন সভাপতি, ক্যাজুয়াল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ(বিটিসিএল)। মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আহবায়ক (আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি) বিটিসিএল ক্যাজুয়েল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, মোঃ আল আমিন সদস্য সচিব (আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি) বিটিসিএল ক্যাজুয়েল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, সদস্য সচিব রিফাত আন্দোলন কমিটির সদস্য, আবুল খায়ের মঞ্জুমদার—সভাপতি চট্টগ্রাম অঞ্চল প্রমুখ।