জেলা প্রতিনিধি,লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়নের খাসের হাট বাজারে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা আলতাফ হোসেন মাস্টার ও তার সমর্থিত লোকজনের বিরুদ্ধে।
গেল উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বহিস্কৃত প্রার্থী আলতাফ হোসেন বহাল তবিয়তে থেকেই আধিপত্যতা কায়েম করছেন চরবংশী ইউনিয়নে। সেখানে যারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নৌকা ভোট করেছেন তাদের মারধর করাসহ দলীয় অফিস ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে পদদলিত করে, নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাট করে, নারীদের ঘর থেকে টেনে বের করে এনেছিল তাহলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
খাসের হাট বাজারে আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় দেয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার মধ্যরাতে বহিস্কৃত নেতা আলতাফ মাস্টারের ক্যাডারবাহিনী অতর্কিত হামলা চালিয়ে দলীয় অফিস ভাঙচুর করে। এ সময় খলিফা বাড়িতে ঢুকে রাতের আধারে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন খলিফাকে কুপিয়ে হাতের কব্জি দুভাগ করে দেয়, একই বাড়ীর মুজাহিদকে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র) মুখের উপর কোপ মেরে দেয়। এতে তার ডান চোখ বেরিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তাদের মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান খলিফা, রাশেদ খলিফা, আবু সুফিয়ান খলিফা, জুবায়ের খান, জুলহাস খলিফা, মোজাম্মেল খলিফা, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাল, আমজাদ মাঝি, নুর নবী ও নাজমুল। এদের কারো মাথা, কারো হাতে,কারো ঘাড়ে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
ইউনিয়ন যুবলীগ সেক্রেটারি রাশেদ খলিফা বলেন-‘ আমরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি করি, আওয়ামী লীগ করার কারণে শেখ হাসিনা সমর্থিত উপজেলা প্রার্থী মামুনুর রশিদের নৌকা মার্কা নির্বাচন করার কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী, দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা আলতাফ মাস্টারের রোষানলে পুড়ছি। এজন্য আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলা, রাতের আধারে ঘরে ঘরে ঢুকে পুরুষদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা, বাড়িঘরে লুটপাট ভাঙচুর করা এমনকি নারীদের শ্রীলতাহানি করেছেন আলতাফ মাস্টারের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী।’
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ হোসেন দেওয়ান বলেন -‘আমরা নৌকা মার্কা নির্বাচন করার জন্যই আজকে আমাদের উপরে সন্ত্রাসী হামলা। কেন খাসের হাটে দলীয় কার্যালয় দিয়েছি এ কারণে আলতাফ মাস্টারের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে আমাদের দলীয় লোকজনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এটা কোন ধরনের বর্বরতা! রাতের আধারে ঘরে ঘরে ঢুকে নারী-পুরুষের উপর হামলা করে। ঘরবাড়ি লুটপাট করে। আমরা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি, এটাই আমাদের দোষ?
এই নিয়ে অভিযুক্ত আলতাফ মাস্টারের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রায়পুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি বিধায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন -‘আমি ঘটনাটা শুনেছি, তদন্ত করে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’