বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় থ্রিলার ‘মাসুদ রানা’ সিরিজটির নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি যে নাম মনে ভেসে আসে সেটি এর লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন। তবে সেই ভাবনায় ছেদ পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের দেওয়া এক রায়ে। কাজী আনোয়ার হোসেন এই তুমুল জনপ্রিয় সিরিজের স্রষ্টা তবে বেশিরভাগ পর্বের লেখক শেখ আবদুল হাকিম।
রবিবার (১৪ জুন) এই রায় দেন বাংলাদেশ কপিরাইট কার্যালয়। যার ফলে দাবিকৃত মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি এবং কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে কপিরাইট সত্ত্ব পেতে যাচ্ছেন শেখ আবদুল হাকিম।
রায়ে বলা হয়, সেবা প্রকাশনীর তুমুল জনপ্রিয় এই সিরিজটি প্রথম ১১ টি বইয়ের পর ২৬০ পর্ব পর্যন্ত এটি লিখেছেন শেখ আব্দুল হাকিম।২০১৯ সালের ২৯ জুলাই মামলা করেন শেখ আবদুল হাকিম। তিনি ছাড়াও মাসুদ রানার আরেক লেখক ইফতেখার আমিনও কপিরাইট আইনে মামলা করেছেন মাসুদ রানার স্বত্ব নিয়ে। তবে ইফতেখার আমিনের মামলা এখনও চলমান বলে জানিয়েছে কপিরাইট অফিস।
বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, কাজী আনোয়ার হোসেন দাবি করেন যে হাকিম সাহেব কর্মচারী ছিলেন এবং তার নির্দেশ অনুযায়ী তিনি লিখেছেন। তিনবার শুনানি শেষে সেসময় যারা সেবা প্রকাশনীর সাথে যুক্ত ছিলেন তাদের মতামত চাওয়া হয়। তারা প্রত্যেকে দাবি করেন যে আনোয়ার হোসেনের কথা সত্য নয় লেখক হিসেবে হাকিম সাহেব কর্মরত ছিলেন। অন্যের লেখা প্রকাশকের নিজের নামে ছাপানো কপিরাইট আইনে ৮৯ ধারা স্পষ্ট লঙ্ঘন। যে ধারায় বলা আছে অপরাধ প্রমাণিত হলে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ৪ লাখ টাকা জরিমানা হব। সেটি যদি হাকিম সাহেব চান তবে দায়রা আদালতে যেতে পারেন।
উল্লেখ্য, ধ্বংস পাহাড় দিয়ে শুরু হওয়া ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ৪৬০টির মতো বই প্রকাশ হয়। এরমধ্যে ২৬০টি শেখ আবদুল হাকিম লিখলেও তার নামে স্বত্ব রয়েছে মাত্র একটি। অন্যদিকে তিনি কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক বলেও কপিরাইট আইন মামলায় জিতেছেন। এই সিরিজের মাত্র ৬টির স্বত্ব তার নামে আছে।
এক বছরের চলমান এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে মতামত দেন সেবা প্রকাশনীর লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, প্রখ্যাত শিল্পী হাশেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খান। তাদের লিখিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই এই রায় দেওয়া হয়।